Monday, January 13, 2025
- Advertisement -

আঁকি বুকি পিচের রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় শুশুনিয়া পাহাড়ের সম্মুখে ।

- Advertisement -

টিভি 20 বাংলা ডেস্ক :- বাঁকুড়া শহর থেকে কিলোমিটার ২২ বেরোলেই আঁকি বুকি পিচের রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় শুশুনিয়া পাহাড়ের সম্মুখে। আর এই পাহাড়ের পিছন দিকে চরৈবতিতে গেলে চোখে পড়ে সবুজ বনানীতে ঘেরা শিউলিবোনা গ্রাম আর সেখানে পৌঁছে গেলেই মিলতে পারে এক অদ্ভুত প্রাকৃতিক দৃষ্টিননন্দন। এই গ্রামের ঠিক আগে নুড়ি পাথর বিছানো খাড়া পথে এবং সবুজ আগাছাকে পিছনে ফেলে দুর্গম পথ বেয়ে উঠে আসলে পাওয়া যেতে পারে এক অদ্ভুত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।

শুশুনিয়া পাহাড়ের ওপরে মোটামুটি ২৫০ মিটার উঠলে একটা বিশাল পাথরের দেওয়াল, তাঁর গায়ে উৎকীর্ণ করা আছে সিংহল রাজ চন্দ্রবর্মার শিলালিপি। শিলালিপিটি টিনের শেড আর তারের জাল দিয়ে ঘেরা।

“পুষ্করণধিপতে মহারাজ শ্রীসিংহবর্মণঃ পুত্রস্য
মহারাজ শ্রীচন্দ্রবর্মন কৃতিঃ
চক্রস্বামীন দাসগ্রেনাতি সৃষ্টঃ”।

আঁকি বুকি পিচের রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় শুশুনিয়া পাহাড়ের সম্মুখে ।

অর্থাৎ পুস্করনা অধিপতি শ্রী সিংহবর্মা পুত্র চন্দ্রবর্মা কৃর্তি এই লিপি। যিনি ছিলেন একজন বিষ্ণুর উপাসক। লিপির ভাষা সংস্কৃত, কিন্তু অক্ষর চতুর্থ খ্রীষ্টাব্দের ব্রাম্মী লিপি। পাথরের গায়ে উৎকীর্ণ শিলালিপির পাঠোদ্ধার করেছেন অনেকে ইতিহাসবিদরা পোষন করেছিন বিভিন্নমত। এই শিলা লিপিটির দুটি অংশ।উপরের অংশে থাকা বৃত্ত বা চক্র থেকে কত গুলি রেখা বেরিয়ে এসেছে। এই রেখা গুলি একটি বড় বৃত্ত বা চক্র দিয়ে ঘেরা। এই বৃত্তের সমান্তরালে থাকা আরেকটি বৃত্ত থেকে চৌদ্দটি অগ্নিশিখা বেরিয়েছে।প্রতি অগ্নিশিখার পরে দুটি অর্ধবৃত্ত খোদিত। লিপি বিবর্তনের প্রেক্ষিতে বলা হয় শুশুনিয়ার লিপিটি ভাবলিপি। এমন লিপিতে কোন বস্তু বা ভাবকে বোঝাতে পুরো ছবি না এঁকে সামান্য কিছু রেখা বা মোটিফ ব্যাবহার করা হতো।

আঁকি বুকি পিচের রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় শুশুনিয়া পাহাড়ের সম্মুখে ।

ভারত সেবাশ্রম কে অ্যাম্বুলেন্স প্রদান অধীর চৌধুরীর

পন্ডিতেরা এখানকার এই ভাবলিপিকে ‘বিষ্ণুচক্রের’ আক্ষা দিয়েছেন। এই বিষ্ণুচক্রের নীচে ও পাশে তিনটি ছত্রে খোদিত লিপি রয়েছে। এটি শুশুনিয়ার লিপির দ্বিতীয় অংশ। অনেকে মনে করের শুশুনিয়া পাহাড়ের এই অংশে নাকি বৌদ্ধ শ্রবনেরা থাকতেন এই লিপি তাদের জন্যও লিপিবদ্ধ হতে পারে। আবার অনেকে মনে করেন সিংহল রাজ চন্দ্রবর্মা বাংলা বিজয়ের এক দৃষ্টান্ত মূলক পাথুরে প্রমানও হতে পারে এই লিপি। কয়েক যুগ ধরে এই বিষয় নিয়ে তর্জা চললেও বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট ধারনা এখনো উঠে আসেনি।

মহারাজা চন্দ্রবর্মা এখন ইতিহাস। বহু বছর আগে লুপ্ত হয়েছে শুশুনিয়া পাহাড়ে তার দুর্গ। এখন এই দুর্গম অঞ্চল হয়েছে কিছুটা হলেও মানুষের বসবাসের যোগ্য এবং তৈরি হয়ে বিশাল এক চারনভূমি। শুশুনিয়া পাহাড় এখন পিকনিক স্পট ও পর্বতারোহিদের শৈলারোহন অনুশীলন ও শিক্ষন কেন্দ্র হিসেবেই বেশী পরিচিত। কিন্তু এখানে নিবিড় প্রকৃতির মাঝে চারদিকের হাওয়ায় ইতিহাসের শ্বাস বয়ে যায়, যা এক লোকায়ত গাথা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments