Wednesday, December 4, 2024
- Advertisement -

আজকালকার ছেলেমেয়েরা নিজের জেলার ইতিহাস সম্বন্ধেই জানে না

- Advertisement -

শুভ চক্রবর্তী পশ্চিম মেদিনীপুর:- আজকালকার ছেলেমেয়েরা নিজের জেলার ইতিহাস সম্বন্ধেই জানেনা। তাদের দুনিয়া মোবাইলেই সীমাবদ্ধ। সারাক্ষণ মোবাইলে টুকটুক করে হোয়াটসঅ্যাপ আর ফেসবুক করতে করতেই দিন শেষ হয়। অবশ্য তাদের সেই ইতিহাস জানানোর ব্যবস্থা করে নি এতদিন কর্মকর্তা আধিকারিকরা।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক নিজেই জানেন না মেদিনীপুর জেলার ইতিহাস সম্বন্ধে, জেলার ইতিহাসের খ্যাতনামা বইটাই তিনি পড়েননি । আজ দাসপুরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বইমেলা উদ্বোধন করতে এসে এমনই তীব্র ভাষায় একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিক কে ভর্ৎসনা করলেন মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁঞ্যা। একই সাথে পরামর্শ দিলেন একাধিক আধিকারিকেও কিভাবে স্কুল স্তর পর্যন্ত জেলার ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া যায়।

আজ থেকে শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বইমেলা। পূর্ব সূচি অনুযায়ী ১২ ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঘাটাল অরবিন্দ স্টেডিয়ামে সেই মেলা হওয়ার কথা থাকলেও তড়িঘড়ি নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার কারণে আধিকারিকরা মেলা আয়োজন করে দাসপুরে। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর, জেলাশাসক ডক্টর রশ্মী কোমল, সহ একাধিক প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক পদাধিকারীরা। প্রধান অতিথি হিসেবে মানস বাবু তার বক্তব্যে বারবার আক্ষেপ করে বলেন জেলার ইতিহাস, মহাকুমার ইতিহাস দীর্ঘদিন ধরেই বঞ্চিত হচ্ছে। মানুষ ভুলতে বসেছে সেই পুরনো ইতিহাস ।এর জন্য অনেকাংশেই প্রশাসনিক আধিকারিকরা এবং কর্মকর্তারা দায়ী। তিনি বলেন বই যদি হারিয়ে যায় সমাজ থেকে, মন থেকে, মস্তিষ্ক থেকে তাহলে তার সাথেই সভ্যতা ডুববে অন্ধকারে। ডিজিটাল দুনিয়া মোবাইল হোয়াটসঅ্যাপ আমাদের দিনের অনেকটা সময় শেষ করছে সাথে সাথে আমরা হারিয়ে ফেলেছি বই পড়ার অভ্যাস।আজকালকার ছেলেমেয়েরা নিজের জেলার ইতিহাস সম্বন্ধে জানে না।

আজকালকার ছেলেমেয়েরা নিজের জেলার ইতিহাস সম্বন্ধেই জানে না

সব খবর এক সাথে

এরপরই তিনি জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক শেখ মোহাম্মদ সহিদুল্লাকে জানতে চান তিনি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ইতিহাস এর উপর নরেন্দ্রনাথ দাস রচিত বিখ্যাত বইগুলি পড়েছেন কিনা। মন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে পড়ে যান জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক মানসবাবু আক্ষেপের সুরে বলেন জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক যদি জেলার ইতিহাস জানেন তাহলে আর কী বলার আছে। এর পরই তিনি নির্দেশ দেন জেলাশাসক এর সাহায্য নিয়ে গ্রন্থাগার আধিকারিক যেন জেলার ইতিহাসের উপর রচিত পুরানো ভালো বইগুলি ডিজিটালাইজড করেন এবং জনগণের কাছে দ্রুত পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। অবিভক্ত বাংলায় প্রথম গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে দাসপুরের চেঁচুয়াতে। ইংরেজদের গুলিতে ১৪জন শহীদ হন দাসপুরে। সেই ইতিহাস নতুন প্রজন্ম অধিকাংশই জানেনা তারা জানেনা চন্দ্রকোনায় কি বিশাল শিল্পময় জগৎ ছিল।

তারা জানেনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে সাংস্কৃতিক আবহাওয়া কেমন ছিল। সাধারণ মানুষ ভুলতে বসেছে প্রদ্যুৎ ভট্টাচার্য সাধারণ মানুষ ভুলতে বসেছে ক্ষুদিরাম বসুকে। আজ আমরা যদি কোন সদর্থক ভূমিকা না নিই তাহলে আগামী প্রজন্ম আমাদের কোনদিন ক্ষমা করবে না। মন্ত্রী মানস বাবু ঘাটাল রবীন্দ্র শতবার্ষিকী মহাবিদ্যালয় এর অধ্যক্ষ ড.মন্টু কুমার দাস কে অনুরোধ করেন কলেজের একটি অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে যেখানে স্থানীয় এবং জেলার ইতিহাস সম্বন্ধে ছাত্র-ছাত্রীদের অবগত করা যায় এবং এইগুলি যতদ্রুত সম্ভব করতে হবে। অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর ও মানস বাবুর সুরে সুর মিলিয়ে জেলার ইতিহাসের উপর জোর দেওয়ার অনুরোধ করলেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -spot_img
- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments