নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া:- আধুনিকীকরণের জোয়ারে হারিয়ে যেতে বসেছে সাবেকি বাঁশের শিল্প। তার সঙ্গে চীন থেকে আমদানি করা প্লাস্টিকের জিনিস এই শিল্পকে আরো স্তব্ধ করেছে। একসময় বাঁশের তৈরি ঝুড়ি কুলো সহ ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করে ভালোই সংসার চলতো এই শিল্পীদের। কিন্তু কালের স্রোতে বর্তমানে এই জায়গা নিয়ে বসেছে প্লাস্টিকের সামগ্রী। তার মধ্যে রয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ঝুড়ি থেকে কুলো সবই। তাই জীবন-জীবিকায় টান পড়েছে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস থানার শাশপুরের হলদিপাড়ার ডোম সম্প্রদায়ের মানুষদের। একসময় বংশপরম্পরায় তারা এই বাঁশের তৈরি সামগ্রী বিক্রি করে সংসার চালাতেন। সেইসব বাঁশের ঝুড়ি কুলোর চাহিদা ছিল ভালোই। কিন্তু ওই মানুষদের শিল্প সামগ্রীতে থাবা বসিয়েছে চীন থেকে আমদানি করা তুলনামূলক কম দামে সংসারের প্রয়োজন মেটানোর সেই সমস্ত সামগ্রী।
এখনো তারা বাঁশের সেই সমস্ত সামগ্রী তৈরি করছেন বটে কিন্তু বাজার না থাকায় উপযুক্ত পারিশ্রমিক মিলছে না। ওই গ্রামের প্রবীন মানুষ পাহাড় ডোম যুবক বয়স থেকেই এই কাজ করে আসছেন। সেই সময় এই বাঁশের ঝুড়ির বাজার ভালোই ছিল। ঘরে তৈরি ওইসব পসরা নিয়ে বাজার হাটে বসলেই ভালো দামে বিকাত সেসব জিনিস। এখন পাহাড় ডোমের জীবনে বার্ধক্য এসেছে। চাহিদা কমেছে বাঁশের তৈরি জিনিসের। তিনি জানালেন, বাঁশ কিনে সেই বাঁশকে কেটে কঞ্চি বানিয়ে সেই কঞ্চি ভিজিয়ে তারপর শুকাতে হয়। এরপর সেই কঞ্চি দিয়ে তৈরি হয়। ঝুড়ি কুলো ইত্যাদি। জীবনের টানে প্রাচীন এই জীবিকা এখনো ধরে রেখেছেন তারা। কিন্তু সেই অর্থে বাজার নেই। তাই অনেক কষ্টে দিন গুজরান করে চলেছেন এই পেশায় যুক্ত মানুষরা। এই পেশার সঙ্গে যুক্ত আরও এক মানুষ হলদিগ্রামের চরক ডোম।
আধুনিকীকরণের জোয়ারে হারিয়ে যেতে বসেছে সাবেকি বাঁশের শিল্প।
হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডে তৃতীয় অভিযুক্ত রঞ্জিত মল্লিক সিবিআইয়ের জালে।
তিনি জানান, চাহিদা কমে গেলেও পেটের তাগিদে এই বাঁশের সামগ্রী তাঁরা তৈরি করে চলেছেন। প্লাস্টিকের জিনিস আসার আগে যা তারা বিকাতেন ২০০ টাকায় এখন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে সেই জিনিস বিক্রি করতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়। তাই নতুন করে এই শিল্প আর কেউ শিখতে চাইছে না। তাই সময়ের গর্ভে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে সাবেক কালের এক কুটির শিল্প।