নিশীথ দাস, উত্তর ২৪ পরগনা:- সততার নজির গড়লেন বসিরহাটের এক মাছ ব্যবসায়ী।বছর তিনেক আগে এক প্রতিবন্ধী শিক্ষকের হারিয়ে যাওয়া ৭০ হাজার টাকা সমেত ব্যাগ ফিরিয়ে দিলেন তিনি। উত্তর ২৪ পরগনা বসিরহাটের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার এলাকার ঘটনা। জানা গিয়েছে, চম্পক নন্দী নামে ওই স্কুল শিক্ষকের বসিরহাট নতুন বাজারে একটা মুদিখানার দোকান আছে। ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর মাছ বাজারে তার একটি টাকার ব্যাগ হারিয়ে যায়। যার মধ্যে ছিল ৭০ হাজার টাকা। বেশ কিছুদিন ধরে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও সেই টাকা না পেয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছিল ওই প্রতিবন্ধী শিক্ষক এবং তাঁর পরিবার। ওই দিনই ৬০ উর্ধ বৃদ্ধ আবুল কাশেম গাজী নামে এক মাছ ব্যবসায়ী ওই ব্যাগটি কুড়িয়ে পান। বসিরহাট ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তপারচর এলাকার বাসিন্দা আবুকাশেমসাহেব অনেক খোঁজাখুঁজি করেও হারিয়ে যাওয়া ওই টাকার ব্যাগের মালিকের কোনো সন্ধান পাননি।
তারপর টাকার ব্যাগ নিয়ে সে প্রতিদিন দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও ওই হারিয়ে যাওয়া টাকার মালিকের আর দেখা মেলেনি। তার মধ্যে গত দু’বছর করোনার লকডাউন এর মধ্যে দোকান বন্ধ থাকায় টাকার ব্যাগও ফেরত দেওয়া হয়নি। দিন পনেরো আগে একদিন ওই মাছ ব্যবসায়ী ব্যাগ খুলে দেখেন তার মধ্যে ৭০ হাজার টাকা রয়েছে।পাশাপাশি টাকার সঙ্গে একটি ক্যাশ মেমোও রয়েছে। যেখানে প্রতিবন্ধী শিক্ষক চম্পক নন্দীর নাম লেখা রয়েছে। এরপরেই মাছ ব্যবসায়ী ওই শিক্ষকের ছেলেকে ডাকলে সে বাবার কথা তোলে হারিয়ে যাওয়া টাকার ব্যাগ নিয়ে। তারপর বৃহস্পতিবার ওই মাছ ব্যবসায়ী শিক্ষক আবুল কাশেম গাজীকে তার নিজের বাড়িতে ডেকে পাঠান। শিক্ষক তার বাড়িতে উপস্থিত হলে সঙ্গে সঙ্গেই সহৃদয় মাছ ব্যবসায়ী হারিয়ে যাওয়া ৭০ হাজার টাকা সমেত ব্যাগ তাঁকে ফিরিয়ে দেন। সেইসঙ্গে মিষ্টিও খাওয়ান তাঁকে।
এক প্রতিবন্ধী শিক্ষকের হারিয়ে যাওয়া টাকার ব্যাগ ফেরত দিলেন বৃদ্ধ মাছ ব্যবসায়ী।
খড়গ্রামে ড্রাম ভর্তি তাজা বোমা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো।
মাছ ব্যবসায়ী আবুল কাশেম গাজীর মানবিকতা দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন প্রতিবন্ধী শিক্ষক চম্পক নন্দী। তিনি জানান, ‘এই মাছ ব্যবসায়ীর থেকেই আমি মাছ নিই।আমার হারিয়ে যাওয়া টাকাটা সে তিন বছর ধরে নিজের কাছে রেখে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে আমাকে ফিরিয়ে দিল। এই ধরনের সৎ মানুষ এবং সৎ চিন্তাভাবনায় উন্মুক্ত মানুষ খুব কমই দেখা যায়। সবাই যদি এইভাবে এগিয়ে আসে তাহলে আমাদের সমাজ আরো উন্নত হবে।’পাশাপাশি এদিন ওই শিক্ষক ফেরত পাওয়া ৭০ হাজার টাকার মধ্যে বেশ কিছু টাকা ওই মাছ ব্যবসায়ীকে পুরষ্কার হিসেবে তার হাতে তুলে দেন। এমনকি বসিরহাট থানার পক্ষ থেকে শুক্রবার দুপুরে মাছ ব্যবসায়ী আবু কাশেম গাজীকে ফুল মিষ্টি উপহার দিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।