চিকিৎসক সাসপেন্ড করেই কি বাংলার ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সুস্থ করা যাবে?
বিষাক্ত স্যালাইন কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুরে মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেছেন ও তাদের বিরুদ্ধে FIR করা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর ও CID-র প্রাথমিক রিপোর্টে এদের গাফিলতি প্রমাণ হয়েছে বলেই মুখ্যমন্ত্রী জানান। কয়েকদিন ধরেই স্যালাইন কাণ্ডে উত্তাল বাংলা। এক প্রসূতি ও এক সদ্যোজাতের মৃত্যুর দায় ঘটনার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকদের কাঁধেই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, চিকিৎসকরা সতর্ক হলে এই পরিস্থিতি হত না। এরপরই সাসপেন্ড করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের সুপার জয়ন্ত রাউত, আরএমও-সহ মোট ১২ সিনিয়র, জুনিয়র চিকিৎসককে।
প্রশ্ন, ওই বিষাক্ত স্যালাইন কি ডাক্তারেরা কাঁধে করে নিয়ে এসেছিলেন – যার জন্য এই নির্মম ঘটনা ঘটে গেল। এক মাস আগে বাতিল হওয়া ওই স্যালাইন কেন বাংলার বিভিন্ন সরকারি হসপিটালে ব্যবহার করা হচ্ছে? কার বা কাদের স্বার্থে ওই বিষাক্ত স্যালাইন ইতিমধ্যে হাজার হাজার রুগীকে দেওয়া হয়েছে? সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর মুখ্যমন্ত্রী দেন নি।
জুনিয়র চিকিৎসকদের সাসপেন্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাতেই সুর চড়িয়েছিলেন আর জি করের আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার সকাল থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যালের জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতির ডাক দেন। সেই মতো সকাল থেকেই শুরু হয়েছে কর্মবিরতি। তাঁদের সাফ কথা, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আর জি কর কাণ্ডের পরও কর্মবিরতির পথেই হেঁটেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ওই ১২ জন চিকিৎসকের অবহেলার কারণেই একজন মায়ের মৃত্যু হয়েছে, আর তিনজন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। সিনিয়র ডাক্তারেরা অনেকেই ওই সময় OT-তে থাকার কথা থাকলেও ছিলেন না। অন্যত্র প্রাইভেট নার্সিং হোমে ছিলেন। এই অপরাধ ক্ষমাহীন। এই নিয়ে তদন্ত হওয়া জরুরী। কিন্তু মৃত্যুর কারণ যে বিষাক্ত ‘স্যালাইন’ – সেই বিষয়ে নীরব কেন মুখ্যমন্ত্রী? কেন তিনি বলছেন না কার নির্দেশে ওই বিষাক্ত ও নিষিদ্ধ স্যালাইন ব্যবহার করা হচ্ছিল? সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর বাংলার মানুষের কাছে নেই।

