দেবাশীষ গুছাইত, হাওড়া :-
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার কোলোড়া ১নং পঞ্চায়েত এলাকার দক্ষিণ কোলোড়া সেখ পাড়া এলাকায়। মৃত শেখ জাহিরুদ্দিন( 25) বলেই পুলিশ সূত্রে খবর।
স্থানীয় সূত্রের খবর মৃত শেখ জাহিরউদ্দিন হাওড়ার নতিবপুর পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা সেখ পরিবারে মেয়ের মধ্যে প্রণয় ঘটিত সম্পর্কে আবদ্ধ ছিল। তবে মেয়ের সঙ্গে এই ধরনের সম্পর্ককে মেনে নিতে পারেন নি পরিবারের কেউ। তাই বিভিন্নভাবে তাদের সম্পর্ক ভাঙার বহু চেষ্টা চালায় মেয়ের পরিবারের সদস্যরা। অনেকদিন ফোনে মেয়ের প্রেমিককে মারধরের হুমকিও দেওয়া হতো বলেই স্থানীয় সূত্রের খবর।
আত্মঘাতী শেখ জাহিরউদ্দিন কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে কাজ করতো। তার পরিবারের অভিযোগ রবিবার তার প্রেমিকার বাড়ি থেকে তাকে ফোন করা হয়। ফোনে তাকে জানানো হয় যে তার প্রেমিকা আত্মঘাতী হয়েছে আর তার এই পরিণতির জন্য শেখ জাহিরউদ্দিনকে দোষী করা হয়। মৃতের পরিবারের অভিযোগ এই খবর পাওয়ার পর সে ভেঙে পরে ও মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এরপরই সোমবার দিনে তাদের বাড়িতে খবর আসে শেখ জাহিরউদ্দিন যেখানে থাকতো সেখানেই সে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। এরপরই পরিবারে নেমে আসে শোকের ছায়া। মৃত জাহিরুদ্দিনের মা নাসিমা বেগম জানান তারা দুজনের প্রেমের সম্পর্ক জানতে পেরে মেয়ের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। সেখানে তাদেরকে অপমান করে বের করে দেয় মেয়ের পরিবারের লোকেরা। এরপর থেকে মাঝেমধ্যেই তার ছেলেকে মেয়ের বাড়ি থেকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিত। তার ছেলেকে মিথ্যে কথা বলে মেয়ের বাড়ি থেকে। যার জন্যই তার ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে। তিনি মেয়ের পরিবারের লোকেদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান। যদিও মেয়ের বাড়ি থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়ের মা তৈয়বা শেখ জানান ছেলের বাড়িঘর রোজগার ভালো না থাকার জন্য তারা বিয়েতে রাজি হন নি। এরপরে তার স্বামী ও নন্দাই মিলে ছেলের বাড়ির লোকের সঙ্গে কথাও বলেন। গতকাল রাত্রে তারা বাড়ি ছিলেন না। তখন ছেলের বাড়ির লোকেরা এসে বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানোর অভিযোগ জানান। প্রায় দুই লাখ টাকা ও গয়নাগাটি লুটপাট চালায়। থানাতে অভিযোগ জানানো হলে গতকাল রাত্রে পুলিশ আসে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোলোড়া ১নং পঞ্চায়েত প্রধান নিলুফা মল্লিক জানান ঘটনার কথা তিনি দিন দশেক আগে জানতে পারেন। প্রায় চার বছর ধরে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। কয়েকদিন আগে দুই পক্ষকে সামনাসামনি বসিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেন তিনি। তবে তা মেটেনি। দুজনের সঙ্গেই যোগাযোগ ছিল বলেই দাবি করেন প্রধান। তিনি বলেন তিনি শুনেছেন যে মেয়ের অন্যত্র বিয়ের কথা হচ্ছিল। তার বাগদানের ছবি ছেলেকে পাঠালে সেটা দেখে সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। যদিও সেটা শোনা কথা বলেই তিনি দাবি করেন। পাশাপাশি তিনি বলেন যে ছেলে প্রেমিকার জন্য প্রাণ দিলো সেই ছেলের পরিবারের লোকেরা মেয়ের বাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারেন।
গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।