প্রতিনিধি সুব্রত দে ,ত্রিপুরা:- প্রয়াত হলেন সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্য । দীর্ঘ ৫ দিনের জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ের কাছে শুক্রবার সকালেই হার মানলেন প্রতিবাদী কলম পত্রিকার তেলিয়ামুড়ার সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্য । শুক্রবার ভোর রাতে প্রায় আনুমানিক ৬ টা ১২ মিনিট নাগাদ দুই দশক সাংবাদিকতার ইতি টানলেন সাংবাদিক ব্রতীন । জানা যায়, পুজো কাটিয়ে হঠাৎ শারিরীক অসুস্থতার কারণে গত সোমবার সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্য রাজধানীর হাঁপানিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভর্তি হয় । যদিও দীর্ঘ ৪ দিন যাবৎ চলে উন্নত পর্যায়ের চিকিৎসা । কিন্তু আজ শুক্রবার পঞ্চম দিনের ভোর রাতে আনুমানিক ৬ টা ১২ মিনিট নাগাদ হাঁপানিয়া হাসপাতাল তথা “ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজে” চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসকের সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে মৃত্যুর ঘন কালো ছায়ায় ঢলে পড়েন ব্রতীন । সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্যের এই অকাল প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা সংবাদ মহল । মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৩৯ বছর । মৃত্যুকালে তিনি বৃদ্ধ বাবা-মা সহ স্ত্রী ও ১২ বছরের এক কন্যা রেখে গেছেন । উল্লেখ্য, গত সোমবার হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গেই তাকে ভর্তি করা হয় হাঁপানিয়া হাসপাতালে । কিন্তু শুক্রবার ভোর রাতে চিকিৎসকের সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন প্রতিবাদী কলম পত্রিকা’র সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্য । পরবর্তীতে দুপুর ১ টা নাগাদ আগরতলার হাঁপানিয়া হাসপাতাল থেকে তাঁর মৃতদেহ গাড়ি করে প্রথমে নিয়ে আসা হয় তেলিয়ামুড়া মহকুমা প্রেস ক্লাবে । সেখানে মহকুমা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক পার্থ সারথী রায় সহ মহকুমার সমস্ত সাংবাদিকরা একে একে পুষ্পস্তবক দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান অকালে প্রয়াত সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্যকে । প্রেস ক্লাবে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন শেষে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তেলিয়ামুড়া থানার সামনে । সেখানেও করা হয় পুষ্পস্তবক । সেখান থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে আসা হয় নেতাজীনগড় স্থিত নিজ বাসভবনে । ব্রতীনের মৃতদেহ নিজ বাড়িতে পৌঁছুতেই স্থানীয়দের ভিড় জমে ও কান্নার রোল ভেঙে পড়ে । তৎক্ষনাৎ সঙ্গে সঙ্গেই খবর পেয়ে ছুটে আসেন ত্রিপুরা সরকারের মুখ্যসচেতক তথা তেলিয়ামুড়ার বিধায়িকা কল্যাণী রায়, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সম্পাদক প্রণব সরকার, নিউজ ভ্যানগার্ড চ্যানেলের কর্ণধার সেবক ভট্টাচার্য্য, নিউজ টু ডে চ্যানেলের কর্ণধার সুরজিৎ পাল সহ আরও অন্যান্যরা । তাঁরা সকলেই প্রয়াত সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্যকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন । পরবর্তীতে বিকাল ৩ টা নাগাদ অকালে প্রয়াত সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্যের মরদেহ শেষ-কৃত্যের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয় মহা-শ্মশানঘাটের উদ্দেশ্যে । উল্লেখ্য, তাঁর এই অকাল মৃত্যুতে তেলিয়ামুড়া সহ গোটা রাজ্যের সংবাদ জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া । এইদিকে সাংবাদিক ব্রতীন ভট্টাচার্য্য মৃত্যুকালে রেখে গেছেন বৃদ্ধ মা-বাবা সহ স্ত্রী ও একমাত্র ১২ বছরের নাবালিকা কন্যা সন্তান । সাথে রেখে গেছেন সংবাদ জগতের অসংখ্য সহ-কর্মী এবং অনুগামীদের । বর্তমানে ব্রতীন ভট্টাচার্য্য মৃত্যুকাল পর্যন্ত একনিষ্ঠভাবে রাজ্যের প্রভাতী সংবাদপত্র “প্রতিবাদী কলম” পত্রিকা এবং PB24 চ্যানেলে কাজ করে গেছেন তেলিয়ামুড়ার প্রতিনিধি হিসেবে । যদিও ২০০৩ সালে হাতেকড়ি ব্রতীন ভট্টাচার্যীর সংবাদ মাধ্যমের পেশায় আসা প্রাইম ফোকাস নিউজ চ্যানেলে কাজের মধ্যে দিয়ে । পাশাপাশি তৎকালীন সময়ে দৈনিক সান্ধ্য পত্রিকা “বাংলা নামে দেশ” পত্রিকায়ও সে কাজ করতো । সাংবাদিকতা পেশার পাশাপাশি ব্রতীন ভট্টাচার্য্য গান গাওয়া পছন্দ করতেন ও মন থেকে ভালোবাসতেন । যদিও তাঁর পছন্দের গায়ক ছিলেন নচিকেতা । এইভাবে সকলকে নিয়ে হাসি খুশি থাকা ব্রতীন ভট্টাচার্যের অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া বিরাজ করছে গোটা সংবাদ মহলজুড়ে ।।
- Advertisment -