নিশীথ দাস, TV-20 বাংলা: অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এত বছরের অভিনয় জীবনে এত খ্যাতি পাননি যা গত শুক্রবার রাত থেকে পেয়ে চলেছেন। অর্পিতা বোধহয় স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি হঠাৎই ইডিআধিকারিকরা হানা দেবে তাঁর ডায়মন্ড সিটির বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে। উনত্রিশ কোটির বেশি টাকা উদ্ধার করার পর তিনটি টাকা গোনার মেশিন দিয়ে রাতভর টাকা গুনতে হয়েছে ইডির তদন্তকারী আধিকারিকদের। উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ সোনা ও বৈদেশিক মুদ্রা। ফিল্মের কাহিনীকে হার মানায় এই ঘটনা। পার্থ চট্টোপাধ্যাযের সাথে ইডির দফতরে এক ছাদের তলায় বর্তমানে বাস করলেও মুখোমুখি হচ্ছেন না পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা।
বারবার প্রশ্ন উঠেছে, আপাতদৃষ্টিতে মার্জিত ও শিক্ষিত বিপত্নীক পার্থর সাথে কি সম্পর্ক ছিল অর্পিতার! জানা গিয়েছে বারুইপুরের বাগানবাড়িতে একসাথে সময় কাটাতেন তাঁরা। একাধিক স্থানে একসাথে দেখাযেত পার্থ ও অর্পিতাকে। এবার অর্পিতার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া একজোড়া সেক্স টয় বাড়িয়ে দিয়েছে এই জুটির রসায়নের জল্পনা। এদিন অর্পিতা সম্পর্কে আরও তথ্য যোগাড় করতে তাঁর ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাটে আবারও হানা দেয় ইডির আধিকারিকরা।
চিরুনি তল্লাশি চালাতেই ইডির অফিসারদের হাতে উঠে আসে চমক দেওয়া এক নতুন জিনিস একজোড়া সেক্স টয়। অবশ্যই ওই সেক্স টয়গুলি মহিলাদের ব্যবহার করার জন্যই। মধ্যবয়সী একাকী মহিলারা অনেক সময় সেক্স টয়ের সাহায্য নিলেও অর্পিতার বয়সী কোনো মহিলার ক্ষেত্রে এই সেক্স টয় ব্যবহার করার অর্থ শারীরিক সম্পর্কের সময় ‘এক্সট্রা প্লেজার’। অর্থাৎ এই ঘটনা স্পষ্ট করেছে অর্পিতার ফ্ল্যাটে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির যাতায়াত ছিল। ‘প্রভাবশালী’ কথাটি ব্যবহার করতেই হবে কারণ ডায়মন্ড সিটির ওই অ্যাপার্টমেন্ট অর্পিতার একার ক্ষুদ্র রোজগারে কেনা বা ভাড়ায় নেওয়া ও সম্ভব নয়। সেই প্রভাবশালী ব্যক্তি কি তবে পার্থ? কারণ পার্থ বিপত্নীক। তাঁর শারীরিক চাহিদা থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। শারীরিক চাহিদা মেটানো, কালো টাকা লুকানো ও ইনভেস্ট করার ভরসাস্থল হিসাবেই কি পার্থ ব্যবহার করতেন অর্পিতাকে?
এছাড়াও অর্পিতার ডায়মন্ড সিটির ফ্ল্যাট থেকে একটি সোনার ও একটি হীরের আংটি পাওয়া গিয়েছে যার গায়ে ইংরাজিতে খোদাই করে লেখা রয়েছে ‘পি’ অক্ষরটি যা ইঙ্গিত করছে পার্থর দিকেই। এমনকি অর্পিতার নামে রয়েছে দক্ষিণ কলকাতার একটি অ্যাপার্টমেন্ট যা থেকে তিনি চালাতেন নিজের প্রযোজনা সংস্থা। একই সাথে বেশ কয়েকটি নেল আর্ট পার্লারের মালকিন অর্পিতা । বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার একসময়ের বাসিন্দা অর্পিতা নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। তাঁর পিতা সরকারি চাকুরে ছিলেন। মা ছিলেন সাধারণ গৃহবধূ। অর্পিতার পিতা প্রয়াত হওয়ার পর থেকেই বেলঘরিয়ার বাড়িতে যাওয়া বা মায়ের সাথে যোগাযোগ রাখা অত্যন্ত কমিয়ে দিয়েছিলেন অর্পিতা। তবে ঘটনার দিন দুই আগে মায়ের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন অর্পিতা। তাঁর উপার্জন কখনওই এতটা ছিল না, তিনি নেল আর্ট পার্লারে ইনভেস্টমেন্ট করতে পারেন বা কোনোরকম বিলাসবহুল জীবন যাপন করতে পারেন। তাহলে এই নেল আর্ট পার্লার, প্রযোজনা সংস্থার ইনভেস্টর কে বা কারা, প্রশ্ন রয়েছে এখানেও।
অপরদিকে সেক্স টয় ঘটনার পর বেলা বাড়তেই রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল পার্থকে। গ্রেফতারির দিন থেকে পার্থ বারবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোন তোলেননি মমতা। তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও অর্পিতাকে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য হিসাবে অস্বীকার করেছেন। পার্থর কুকর্মের কারণে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্য রাজনীতির ভাবমূর্তি। এমতাবস্থায় মিশন ত্রিপুরা অথবা সমগ্র ভারতের এক নম্বর রাজনৈতিক দল হওয়ার লড়াইয়ে কি টিকতে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস ? ভাবাচ্ছে রাজনৈতিক মহলকে ৷