মুম্বই হামলার আত্মাঘাতী কাসভের জীবনের দাম ছিল মাত্র ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা!
শুনলে চমকে যেতে হয়। একটা মানুষের অভাব এই পর্যন্ত গেছে যে ১লক্ষ ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে সে আত্মঘাতী হয়। এরই নাম গরিবি। এর নামই হল পাকিস্তান। মুম্বই হামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন রাকেশ মারিয়া। আজমল কাসভকে তিনি জেরা করেছিলেন। কাসভকে জেরায় কী কী বলেছিল, সেই সব মারিয়া তাঁর বইয়ে লিখেছেন। বাড়িতে অভাব। তাই ছিঁচকে চুরি দিয়ে শুরু। তারপর ডাকাতি করা শুরু করে কাসভ। পড়ে যায় লস্করের খপ্পরে। মগজ ধোলাই হয়। আত্মঘাতী জঙ্গি হিসাবে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মুম্বই। মরার জন্য কাসভের পারিশ্রমিক ছিল এক লাখ পঁচিশ হাজার টাকা। রাকেশ মারিয়াকে সে জানায়, জঙ্গি শিবিরে লস্কর তাঁকে ওই কটা টাকাই দিয়েছিল। মুম্বই রওনা হওয়ার আগে কাসভ সেই টাকা তাঁর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিল বোনের বিয়ের জন্য। মগজ ধোলাই করে একটা মানুষকে দিয়ে কি না করিয়েছে ওই লস্কর দল।
রাকেশ মারিয়া ২০১৭ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন। তারপর এই বইটি লেখেন। তিনি লেখেন, স্বাধীনতার সময় পাকিস্তানের অর্থনীতি ভারতের থেকে ভালো ছিল। কিন্তু তার পর থেকেই শুরু হয় পতন। ১৯৬০ সালে পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি ছিল ৮৩ ডলারের কিছু বেশি। সেখানে ভারতের ছিল ৮২ ডলারের আশেপাশে। আর আজ কোথায় ভারত, কোথায় পাকিস্তান। এখন পাকিস্তানের মাথাপিছু জিডিপি ১৫৩৮ ডলার। ভারতের সেখানে ২২৭৪ ডলার! দুই দেশের অর্থনীতির পার্থক্য বোঝাতে আরেকটা উদাহরণ দেওয়া যাক। ১৯৬০ সালে পাকিস্তানে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ছিল ২ লক্ষ ৬১ হাজার কোটি রুপি। ভারতের ছিল ৫ লক্ষ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। গতবছর পাকিস্তানের ভাঁড়ারে ছিল দেড় লক্ষ কোটি রুপি। ভারতের রিজার্ভে প্রায় ৪৬ লক্ষ কোটি টাকা। বিশ্বের অর্থনৈতিক মানচিত্রে ভারতের স্থান আজ ৫ নম্বরে। পাকিস্তান ৪৫-এ। কারণ, স্বাধীনতার পর সাড়ে ৬ দশকের মধ্যে ৪ দশক জুড়ে পাকিস্তানে চলেছে সেনাশাসন। বিদেশি আর্থিক সাহায্য যা আসে তার দুই-তৃতীয়াংশই সেনাবাহিনীর খরচ মেটাতে চলে যায়। আর তৈরী হয়েছে হাজার হাজার কাসভ।

