প্রতিনিধি সঞ্জীব মল্লিক, সৈয়দ মফিজুল হোদা, বাঁকুড়া : লাগাতার হাতির তাণ্ডব যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সোনামুখীর জঙ্গল লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা ধান চাষীদের। শুক্রবার সোনামুখী রেঞ্জের কোচডিহি এলাকায় এমনই ছবি উঠে এলো আমাদের ক্যামেরায়। বিঘা পর বিঘা ধান জমি পায়ের তলায় পিষে নষ্ট করেছে বুনো হাতির দলটি। রীতিমতো ব্যাপক আর্থিক সংকটে পড়তে হয়েছে ধান চাষীদের। অনেকেই মহাজনের কাছে ঋণ নিয়ে ধান চাষ করেছেন কিন্তু হাতির তাণ্ডবে পাকা ধানে যেভাবে মই পরল তাতে মহাজনের সেই ঋণ কিভাবে শোধ করবেন তাই ভেবে রাতের ঘুম ছুটেছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের। তাদের দাবি স্থানীয় বনদপ্তর হাতিগুলোকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে সঠিক ভূমিকা পালন করছেন না। সে কারণে তাদেরকে আরো বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।
অশোক নন্দী মনোহর মন্ডল নামের কয়েক জন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জানান, এই পরিস্থিতিতে এখন সংসার কিভাবে চালাবো তাই ভেবে কুল পাচ্ছিনা আমরা। পাশাপাশি আমাদের যে পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে সেই পরিমাণ ক্ষতি পূরণ আমরা পাচ্ছি না। এর জন্য বনদপ্তরকে কাঠ গড়ায় তোলেন তারা। অন্যদিকে সন্ধ্যা হলেই আতঙ্ক গ্রাস করছে সোনামুখী জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীদের। সন্ধ্যা হলেই এক প্রকার গৃহবন্দি হয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। কেননা রাতের অন্ধকারে বাড়ির বাইরে বেরোলে যেকোনো মুহূর্তে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বহুগ্রাম রয়েছে যাদের জঙ্গল পেরিয়ে সোনামুখী শহরে প্রতিনিয়ত আসতে হয় ফলে সন্ধ্যার পর তারা সোনামুখী শহরে আসতে পারেন না। স্বাভাবিকভাবেই তাদেরকেও ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে সোনামুখী জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের। অনেকেই টিউশনি পড়তে সোনামুখী শহরে আসতে হয় কিন্তু সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে তাদেরকে আতঙ্ক নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়। না জানি কখন হাতির সামনে পড়ে কোন দুর্ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতিতে তারা বন দপ্তরের কাছে আবেদন রাখেন হাতি গুলোকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গেলে ভীষণ উপকৃত হয়।
হাতির তাণ্ডবে আর্থিক ক্ষতির মুখে সোনামুখীর ধান চাষীরা , পাশাপাশি আতঙ্কিত জঙ্গল লাগোয়া গ্রামবাসীরা
ক্যারাটের টুর্নামেন্টে পুরস্কার গঙ্গারামপুরে তিন ছাত্রীর
সোনামুখীর কোচডিহি গ্রামের আনন্দ রায় সোনালী ঘটক নামের গ্রামবাসীরা আমাদের ক্যামেরার মুখোমুখি হয়ে বলেন, রাতে একরাশ আতঙ্ক নিয়ে থাকতে হয় সন্ধ্যা হলেই রীতিমতো বাড়ির মেয়ে ছেলেদের আতঙ্ক গ্রাস করে। জঙ্গল পেরিয়ে সোনামুখী শহরে আসা বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ বিষয়ে সোনামুখী রেঞ্জ অফিসার দয়াল চক্রবর্তী জানান, হাতি গুলিকে দ্রুত বিষ্ণুপুর জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার সুবন্দোবস্ত করা হচ্ছে। তবে বন দপ্তরের কোনো গাফিলতি নেই বলেই জানান তিনি। অন্যদিকে যে সমস্ত কৃষকদের হাতির তাণ্ডবে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে তাদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।