আমার বারাসাতে কোনও কলঙ্ক নেইঃ বামন গাছিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন চিরঞ্জিত
নিশীথ দাস বারাসাত :-
২০১১ সাল থেকেই বারাসাতের বিধায়ক তিনি। তিনবার বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে বারাসাত কেন্দ্র থেকে জিতেছেন চলচ্চিত্র অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী। দলীয় স্বার্থ ও দলীয় আদবকায়দা না মেনে বহুবার মনের কথা বলেছেন তিনি। বহুবার হয়েছেন বিতর্কিত। দলের মধ্যে থেকেও এমন কিছু কথা বলেছেন যা নিয়ে বিপাকে পড়েছে দল। এবার ইডি ও সিবিআই হানা প্রসঙ্গে আবার চিরঞ্জিত মুখ খুলেছেন। তবে এবার স্বচ্ছ ভাবমূর্তির চিরঞ্জিত যা বলেছেন তা যদি তার মনের কথা হয়ে থাকে তাহলে দল যেমন উপকৃত হবে, তেমনই দলমত নির্বিশেষে বারাসাতবাসীর আপন হয়ে উঠতে পারেন চিরঞ্জিত। আত্মসমালোচনার মধ্যেও নিজের তথা দলের হয়ে ব্যাট ধরলেন চিরঞ্জিত চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য,নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির নজরে মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠের নামে থাকা টিচার্স ট্রেনিং সেন্টার। যার কারণে শনিবার সকাল থেকেই শহরের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি বারাসাতেও তল্লাশি চালায় ইডি আধিকারিকরা। এদিন সকালে বারাসতে কামাখ্যা মন্দিরের কাছে তাপস মণ্ডলের বাড়িতে হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের একটি বড় দল। ওই ট্রেনিং সেটারের শাটার বন্ধ থাকায় এদিন তালাও ভাঙা হয়। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিক ভট্টাচার্যকে জেরা করে তাঁর বাড়ি থেকে যেসব কাগজপত্র উদ্ধার হয়েছে তা থেকেই এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে। প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে তাপস মণ্ডল প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত রয়েছে বলেই ইডি সূত্রের খবর।
এবার তা নিয়েই মুখ খুললেন বারাসাতের বিধায়ক চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী। শনিবার উত্তর ২৪ পরগনার বামনগাছিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন চিরঞ্জিৎ। সেই অনুষ্ঠানেই তাপস মণ্ডলের বাড়িতে ইডির হানা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘ইডি তো নিজেদের কাজ করবেই। এই প্রসঙ্গে কিছু বলার নেই। তবে, ইডি বারাসাতের জন্য আসেনি। শিকড়ের খোঁজে এসেছে। আমার বারাসাতে কোনও কলঙ্ক নেই। কেউই নীতি মানতে চাইছেন না। এটাই হল আসল সমস্যা। যারা নীতি মানতে চাইছে না তাঁদের মধ্যেই এগুলো হচ্ছে। আর ইডি তাঁদের পিছনেই দৌড়বে। আমিও চাইলে ইডি আর সিবিআই-এর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারি। তাদেরকে আমার বাড়িতে ডাকতেও পারি। আসুন আমার বাড়িতে মিষ্টি খাবেন। কিন্তু চাইলে ইডি আর সিবিআই তাও আসবে না, আমি নিশ্চিত।
পাশাপাশি এদিন তিনি আরও বলেন যে,‘এই ঘটনার কোনও প্রভাব পঞ্চায়েত নির্বাচনে পড়বে না। দু-চারটে কাঁকড় থাকতেই পারে চালে, কিন্তু চালটা খাবো না এ তো হয় না। চাল তো খেতেই হবে। রাজা হতে সবাই চায়নি, কিছু লোক রাজা হতে চেয়েছে। ধরা পড়ছে।
সংযমের ছাপ চিরঞ্জিতের রাজনৈতিক বিশ্লেষণে। অতীতে বহুবার রাজনৈতিক সন্ন্যাস লাভের ইচ্ছে প্রকট করা চিরঞ্জিত কি তাহলে প্রকৃত অর্থেই রাজনৈতিক প্রজ্ঞা লাভ করছেন? একদিকে দলকে নিষ্কলুষ করার চেষ্টা ও অন্যদিকে ‘আমার বারাসাত ‘ শব্দবন্ধের উচ্চারণ করে বারাসাতের আমজনতার আরও আপন হয়ে ওঠার দিকনির্দেশ চিরঞ্জিতের উচ্চারণে।
Give permission