বিপ্লব দে , ত্রিপুরা :- মহালয়া মানে দুর্গাপূজার দিন গোনা । পিতৃ পক্ষ থেকে মাতৃ পক্ষের সূচনা হয় এদিন। ভগবান শ্রী রাম লঙ্কা বিজয়ের আগে তর্পণ করেছিলেন । হিন্দু পুরাণে থেকে জানা যায়, যে জীবিত ব্যক্তির তিন পুরুষ পর্যন্ত পিতৃলোকে বাস করেন। এই পিতৃলোক স্বর্গ ও মর্ত্যের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত একটি স্থান যার অধিষ্ঠাতা দেবতা হলেন স্বয়ং যম। এই মৃত্যুর দেবতা যমই কার্যত মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য বা পৃথিবী থেকে তাঁর মৃত্যুর পর পিতৃলোকে নিয়ে যান। আর তারপর বংশের পরবর্তী প্রজন্মের কারুর যখন মৃত্যু হয়, তখন সেই ব্যক্তি পিতৃলোক ছেড়ে স্বর্গে গিয়ে ঈশ্বর বা পরমাত্মায় মিশে যান। অন্যান্য নানা হিন্দু শাস্ত্রগ্রন্থ অনুযায়ী পিতৃপক্ষের সূচনা তখনই হয় যখন সূর্য কন্যারাশিতে প্রবেশ করে। হিন্দুরা বিশ্বাস করে থাকেন, পিতৃপক্ষের এই সূচনায় তাঁদের পূর্বপুরুষরা পিতৃলোক ত্যাগ করে তাঁদের পরবর্তী প্রজন্মের গৃহে গিয়ে সেখানে অবস্থান করেন। পরে যখন সূর্য আবার যথাসময়ে বৃশ্চিকরাশিতে প্রবেশ করে তখন তাঁরা আবার পিতৃলোকে পুনর্গমন করেন। আর পূর্বপুরুষরা যেহেতু তাঁদের গৃহে অবস্থান করেন তাই তর্পণের উদ্দেশ্যে এইসময় তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হিন্দুরা। বুধবার মহালয়ার দিন একান্ন পিঠের এক পীঠ মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে ভীড় জমান অগনিত পূর্নার্থী। এদিন ভোরবেলা থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পূর্নার্থীরা ভীড় জমান মাতাবাড়িতে। এদিনের এই শুভ দিনে পুণ্যার্থীরা মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরে পূজো দিয়ে নিজের ও পরিবারের সুখ, শান্তি ও সুস্থতা কামনা করেন। এছাড়া এদিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পূর্নার্থীরা তাদের পিতৃ পূরুষদের উদ্দেশ্যে কল্যাণ সাগরে পুরোহিতদের মাধ্যমে মন্ত্র উচ্চারন করে তর্পন করেন। মহালয়ার এই পূণ্য দিনে মাতারবাড়িতে পূণ্যার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
- Advertisment -